পীরগঞ্জ , রংপুর থেকে মোস্তফা মিয়া
রংপুরের পীরগঞ্জে অতিবৃষ্টি ও বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাপক পিঁয়াজ লাগিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক।ফলনো হয়েছে বাম্পার,বর্তমান বাজর দর অব্যাহত থাকলে কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নের সম্ভবনা রয়েছে।
প্রকাশ,সারাদেশের ন্যায় পীরগঞ্জেও অতিবৃষ্টি ও বন্যায় উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের কৃষকদের ১হাজার ৫শত ৬০ হেক্টর জমির ধান সহ রবি শষ্যের ক্ষতি সাধিত হয়েছে।ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকগন চরম হতাশা সহ দুশ্চিতায় দিশাহারা হয়ে পড়ে। কিন্তু পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার ও উপজেলা সহকারি কৃষি কর্মকর্তা নাছিরুল ইসলাম রনি ও তপন চন্দ্র সরকার বন্যা এবং বন্যা পরবর্তী সময় উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শণ সহ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা প্রনয়ণ করেন। সেই সাথে কৃষকদের মনোবল দৃঢ় রাখতে সরকারি প্রনোদনা দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। পাশাপাশি বন্যার ক্ষতি পুষিঁয়ে নিতে কৃষকদের নিয়ে আগাম পিয়াঁজ,আলু, ফুলকপি,বাধাঁকপি,মরিচ’বেগুন,শিম,বর্বটি,মুলা,শরিষা,গম ভুট্টাসহ বিভিন্ন প্রজাতির শাক শব্জি উৎপাদনের উৎসাহ ও সরকার প্রদত্ত সরবরাহকৃত বিনামুল্যের বীজ ও সার সরবরাহ করেন।মাঠ পর্যায়ে পীরগঞ্জ পৌরসভা সহ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে কর্মরত ৪২জন সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়মিত কৃষকের সাথে যোগাযোগ রক্ষার কঠোর নির্দেশ প্রদান এবং তা প্রতিদিন মনিটারিং করার জন্য মাঠ পর্যায়ে যান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ দুই উপজেলা সহকারি কৃষি কর্মকর্তা।ফলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ছাড়াও অন্যান্য অনেক কৃষকেই আগাম বিভিন্ন রবিশষ্য বুনেছে, ইতিমধ্যে অনেকেই আবার শাক-শব্জি বিক্রি করে ভাল মুনাফা পাওয়া শুরু করেছে।
সরেজমিনে গত শনিবার দেখাযায়,পীরগঞ্জ পৌর এলাকাসহ উপজেলার রায়পুর,কাবিলপুর, চত্রা,বরদড়গাহ,কুমেদপুর ও পাঁচগাছী ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ এলাকায় শত শত হেক্টর জমিতে আলু, ফুলকপি,বাধাঁকপি,মরিচ’বেগুন, শিম,বর্বটি, মুলা,শরিষা,গম ভুট্টাসহ বিভিন্ন প্রজাতির শাক শব্জির সবুজ সমারোহ,এর মধ্যে পিয়াঁজের ক্ষেতই উল্লেখ যোগ্য চোঁখে পড়ার মত। কথা হয় বড়দরগাহ্ ইউনিয়নের পার্বতীপুরের পিয়াঁজ চাষী বখতিয়ার রহমানের সাথে, সে এবারেও ৩৩ শতাংশ জমিতে পিয়াঁজ লাগিয়েছে। এতে পিয়াঁজ বীজ লেগেছে ২২মন, প্রতিমন বীজের মুল্যে ৩৬শত টাকা, রাসায়নিক সার ৬ হাজার টাকা, গবর সার ৫হাজার টাক,বীজ বপন ও আগাছা নিরান/পরিস্কার বাবদ ৫হাজার টাকা,সর্বমোট খরচ হয়েছে ৯৫ হাজার ২শত টাকা। তিনি (কৃষক বখতিয়ার) জানায়-গত বছরে এই ৩৩ শতাংশ জমির পিয়াঁজ বিক্রি করেছেন ২লক্ষ ২৫ হাজার টাকা।আগামী ১৫ থেকে ২০দিনের মধ্যে এবারের লাগানো পিয়াঁজ বাজারে বিক্রি করতে পারবে সে। বর্তমানে দেশে পিয়াঁজের যে চাহিদা ও দাম রয়েছে তা অব্যাহত থাকলে ২লক্ষ ৫০ থেকে ৭৫ হাজার টাকার পিয়াঁজ বিক্রির আশা করছেন এই কৃষক।অনুরুপ কথা জানায়-পীরগঞ্জ পৌর এলাকার পিয়াঁজ চাষী শামিম মিয়া,রায়পুরের সিরাজুল মিয়া, কাবিলপুরের মহুবার আলী, চত্রার সুমন শাহীন, কুমেদপুরের উমর ফারুক ও পাঁচগাছী ইউনিয়নের এন্তাজ আলী। তাহারা আরও জানায়-এবারে বন্যা ও বন্যা পরবর্তি সময়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ মাঠ পর্যায়ের সহকারি কর্মকর্তাদের বিশেষ তদারকির কারনে রবিশষ্যে চাষী যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি ফলনও হয়েছে বাম্পার।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার এর সাথে কথাহলে তিনি বলেন-মাঠ পর্যায়ের সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকসহ সকল কৃষকদের উৎসাহ দিয়ে নতুন টেকনোলজির ব্যবহার,প্রদর্শনি ক্ষেতসহ বিভিন্ন রবিশষ্যে চাষে পরামর্শ দিয়েছি। এতে সাড়াও পেয়েছি ব্যাপক হারে।তবে অধিক মুনাফার কারনে পিয়াঁজ চাষীর সংখ্যা একটু বেশী।এবারে পিয়াঁজের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৯শত ৩০ হেক্টও জমি।এখন পর্যন্ত্য অর্জিত হয়েছে প্রায় ৯শত হেক্টর, আশা করছি শেষ পর্যন্ত্য লক্ষমাত্রা ১২শত হেক্টর ছাড়িয়ে যেতে পারে।আগামী ১ মাসের মধ্যে শীতের কুয়াশা মাত্রাতিরিক্ত না হলে প্রতিটি রবি শষ্যেই ভাল ফলনসহ ভাল মুনাফা পাবে কৃষক এবং এতে বন্যার ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে নিতে পারবে কৃষক।